করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে এলে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিলেন শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সচিব সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ নির্দেশ দেন তিনি।
Table of Contents
প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিলেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলারঃ
সভায় উপস্থিত এক সচিব গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার ব্যবস্থার কথা বলেছিলাম। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয় দ্রুত সময়ে স্কুলগুলোও খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। কারণ, শিশুরা ঘরে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। তারা মানসিকভাবেও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সব পদক্ষেপ নিতে হবে। সবার জন্য টিকা নিশ্চিত করতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।
সভায় সচিবদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানো হয়েছে, গাড়ি দেওয়া হয়েছে। আবাসনসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বেড়েছে। এখন দেশের জন্য আপনাদের দেওয়ার পালা। দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স আনতে হবে। কোনোভাবেই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
সচিব সভায় স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) চ্যালেঞ্জ, ডেল্টা প্ল্যান, সবার জন্য টিকা নিশ্চিতকরণ, খাদ্য নিশ্চিতে গবেষণা, কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় নিয়ে আলোচনা হয়। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নিয়েও সভায় আলোচনা হয়।
সভায় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১) বাস্তবায়নে সচিবদের আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোভিড-১৯ ও প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়েও সচিব সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ পর্যন্ত গত ১৭ মাসে দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি বাড়ানো হয়। করোনা সংক্রমণ অব্যাহত থাকায় সবশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান সাধারণ ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
এর আগে গত রোববার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলে আগামী নভেম্বরে এসএসসি এবং ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠতি হবে। পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সংক্রমণের হার ১০ শতাংশে নেমে এলে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।
দীপু মনির বক্তব্যঃ
দীপু মনি
দীপু মনি বলেন, দেশের সামগ্রিক করোনার সংক্রমণ এখন নিম্নমুখী। যদিও সংক্রমণের হার এখনও ২০ শতাংশের ওপরে। আমরা আশা করছি এ হার ধীরে ধীরে কমে আসবে। তাই, পরিস্থিতি আরেকটু স্বাভাবিক হয়ে এলে প্রথমে এসএসসি, পরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে।তিনি আরো বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা করেছি। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসতে হয়েছে। এখন করোনার যে সংক্রমণের হার, মৃত্যুর হার, সবকিছু মিলিয়ে যে অবস্থা, সেসব বিবেচনায় কবে নাগাদ আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারব সেটা বলার কোনো সুযোগ নেই।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, তবে গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বলছি, গত বছর নভেম্বর ও ডিসেম্বরে সংক্রমণের হার অনেক কমে গিয়েছিল। এ কারণেই আমরা এবারও নভেম্বর ও ডিসেম্বরে পরীক্ষাগুলো নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরীক্ষার সময়সূচিসহ সবকিছুই ঠিক করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যঃ

এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানো হয়েছে, গাড়ি দেওয়া হয়েছে, আবাসনসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বেড়েছে। এখন দেশের জন্য আপনাদের দেওয়ার পালা। দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স। কোনোভাবেই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিদ্যমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে সরকারের গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে সচিবদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, আমাদের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বা ডেল্টা প্ল্যান, সে গুলো মাথায় রেখে গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন যেন যথাযথভাবে হয়। কেননা, আমাদের একটাই লক্ষ্য তৃণমূল পর্যায়ের
মানুষগুলো যেন উন্নত জীবন পায়। সভা শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন যে যত তাড়াতাড়ি, কম্ফোর্টেবল সিনারিও এলে যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলুক। ভ্যাকসিনেশন এবং গতবারের মতো ভাইরাসের সংক্রমণ যদি কমে যায় তাহলে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দিতে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণের হার দশ শতাংশের নিচে চলে এলেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেব। প্রথমে আমরা আবাসিক শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেওয়ার কাজ শেষ করব। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনতে পারলে এবং করোনার সংক্রমণের হার কমে এলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেব।
মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সপ্তাহে ছয় দিনের জন্যই শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাব, বিষয়টি এমন নয়। আমরা প্রথম দিকে বিরতি দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাব। এভাবে ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেওয়া হবে।
দীপু মনি বলেন, করোনা খুব সহসাই বিশ্ব থেকে বিদায় নেবে, বিষয়টি এমন নয়। করোনা হয়তো অনেক দিনই বিশ্বে থাকবে, এটিকে মাথায় রেখেই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষা কাঠামো তৈরি করতে হবে।
আরো জানতেঃ
উইকিপিডিয়াঃ প্রধানমন্ত্রী
আমাদের অন্যান্য আর্টিকেল সম্পর্কে জানতে আরো দেখুন:
- গুরুকুল লাইভ: বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে
- গুরুকুল লাইভ: বাংলাদেশ,যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অংশীদার হতে চায়
আমাদের সাইটটি ব্যবহার করায় আপনাকে ধন্যবাদ। আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে যোগাযোগ আর্টিকেলটি দেখুন, যোগাযোগের বিস্তারিত দেয়া আছে।
“প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিলেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে”-এ 1-টি মন্তব্য
মন্তব্য করা বন্ধ রয়েছে।