দেশে ব্যাপক উন্নয়নের পেছনে রয়েছে স্থিতিশীল সংসদীয় গণতন্ত্রের অবদান : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সংসদে বলেছেন, ২০০৮ সাল থেকে সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করছে।

তিনি বলেন, “সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে গত তিন মেয়াদে – (২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ থেকে এ পর্যন্ত) বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ধারাবাহিক অগ্রগতি, সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করেছে।”

 

দেশে ব্যাপক উন্নয়নের পেছনে রয়েছে স্থিতিশীল সংসদীয় গণতন্ত্রের অবদান : প্রধানমন্ত্রী
দেশে ব্যাপক উন্নয়নের পেছনে রয়েছে স্থিতিশীল সংসদীয় গণতন্ত্রের অবদান : প্রধানমন্ত্রী

 

দেশে ব্যাপক উন্নয়নের পেছনে রয়েছে স্থিতিশীল সংসদীয় গণতন্ত্রের অবদান : বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সংসদে প্রস্তাব উত্থাপনকালে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, এ সুযোগের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ অনেক সাফল্য অর্জন করেছে যেমন সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এমডিজি) সফল বাস্তবায়ন, দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশে নামিয়ে আনা, বাংলাদেশের ক্রমান্বয়ে টেকসই উন্নয়ন, বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশেগুলোর ক্লাবে উত্তরণ লাভের মতো অনেক সাফল্য অর্জন করেছে।

সাফল্যগুলোর মধ্যে আরো রয়েছে শতভাগ ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া, যোগাযোগ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন, খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন মানুষ ও ভূমিহীনদের পুনর্বাসন, নারীর ক্ষমতায়ন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীরনিবাস (বাড়ি) নির্মাণ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজ।

তিনি আরো বলেন, “সামগ্রিকভাবে, জনগণের জীবন মানের উন্নয়নে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের এক বিস্ময়”।
গোপালগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হাসিনা বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি দিবসে কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারায় এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

 

দেশে ব্যাপক উন্নয়নের পেছনে রয়েছে স্থিতিশীল সংসদীয় গণতন্ত্রের অবদান : প্রধানমন্ত্রী
দেশে ব্যাপক উন্নয়নের পেছনে রয়েছে স্থিতিশীল সংসদীয় গণতন্ত্রের অবদান : প্রধানমন্ত্রী

 

প্রধানমন্ত্রী তার প্রস্তাবে বলেছেন, “বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ৫০ বছরের শুভ মুহুর্তে, সংসদ এ অভিমত পোষণ যে, সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্র হিসাবে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। এর ফলে জনগণের আশা-আকাঙ্খার সফল বাস্তবায়ন ঘটবে এবং এভাবে গণতন্ত্র সুদৃঢ় হবে, একটি শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে, সকলের জন্য সমতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। এই প্রতিশ্রুতি পূরণে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করব।

তিনি আরো বলেন, সংবিধান অনুযায়ী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের একটি সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ এবং সোনার বাংলা গড়ে তোলার  লক্ষ্য বাস্তবয়নই আমাদের প্রত্যয় হওয়া উচিত।”

এর আগে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সংসদে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ।
১৯৭৩ সালের ৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম সংসদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির জন্য এই সযোগ করে দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে তিনি (বঙ্গবন্ধু) সারা জীবন দুঃখ-কষ্ট সহ্য করেছেন এবং আত্মত্যাগ করেছেন।

দেশ গড়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর মেয়াদের উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা মাত্র তিন বছর সাত মাস তিন দিন সময় পেয়েছিলেন এবং সেই সময়ে তিনি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রেখেছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু সংবিধানের চারটি মূলনীতি গ্রহণ করেছেন, সেগুলো হলো জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এবং এই নীতির ভিত্তিতে তিনি সংবিধানে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ থেকে শুরু করে সকলের মৌলিক অধিকারের কথা বলেছেন।

 

দেশে ব্যাপক উন্নয়নের পেছনে রয়েছে স্থিতিশীল সংসদীয় গণতন্ত্রের অবদান : প্রধানমন্ত্রী
দেশে ব্যাপক উন্নয়নের পেছনে রয়েছে স্থিতিশীল সংসদীয় গণতন্ত্রের অবদান : প্রধানমন্ত্রী

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্প মেয়াদের শাসনামলে ৪৬২টি আইন, অধ্যাদেশ ও আদেশ জারি করা ছিল বঙ্গবন্ধুর এক অসাধারণ কাজ।
শেখ হাসিনা বলেন, “যখন আমি এ বিষয়টি সম্পর্কে চিন্তা করি, আমি ভাবি কিভাবে তিনি এই অল্প সময়ের মধ্যে এত কাজ করতে পারলেন!”

তিনি আরো বলেন, একদিকে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করেছেন, অন্যদিকে গণতন্ত্রকে সুসংহত করে এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর তিন বছর সাত মাসের শাসনামলে বাংলাদেশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় সদস্যপদ লাভের পাশাপাশি ১২৩টি দেশের স্বীকৃতি পেয়েছিল।

এছাড়াও, জাতিসংঘও বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা দিয়েছিল। তিনি বলেন, “এই অগ্রযাত্রা দেশের জন্য এত সহজ ছিল না, তবে তাকে (বঙ্গবন্ধু) অনেক বাধা অতিক্রম করে সেগুলি অর্জন করতে হয়েছিল।”

 

দেশে ব্যাপক উন্নয়নের পেছনে রয়েছে স্থিতিশীল সংসদীয় গণতন্ত্রের অবদান : প্রধানমন্ত্রী
দেশে ব্যাপক উন্নয়নের পেছনে রয়েছে স্থিতিশীল সংসদীয় গণতন্ত্রের অবদান : প্রধানমন্ত্রী

 

তিনি আরও বলেন, সদিচ্ছা থাকলে কীভাবে একটি দেশের পুনর্বাসন, পুনর্গঠন ও উন্নয়ন করা যায়, বঙ্গবন্ধু আমাদের সবার সামনে একটি বিরল উদাহরণ রেখে গেছেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত দেশে পরিণত হতো।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করছি এবং সে কারণেই ২০০৮ সাল থেকে দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রয়েছে, ফলে এখানে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।

তিনি বলেন, মাঝে মাঝে বাধা আসে, কিন্তু সেগুলো অতিক্রম করে আমরা দেশকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাচ্ছি।

উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরই ধারাবাহিকতায় আমরা বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট জাতি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলব।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন, দুর্যোগ মোকাবিলা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে রোল মডেল।

সংসদের সুবর্ণ জয়ন্তী প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদ ৫০ বছরের যাত্রায় অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে। তিনি বলেন, “সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্র- জাতীয় সংসদ বিভিন্ন বাধা-বিপত্তির মধ্যেও গণতন্ত্রের অগ্রগতিতে ভূমিকা পালন করছে।”

তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

আরও দেখুনঃ