করোনায় দেশে আবারো মৃত্যু এবং বাসাভাড়া বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব।

করোনায় দেশে আবারো মৃত্যু

 

মহামারি করোনা ভাইরাস তাণ্ডবে টালমাটাল বিশ্ব। বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশে ধাপে ধাপে কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়ার পর পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। দেশে মৃত্যু ও শনাক্ত দুটোই বেড়েছে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায়।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৭৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত ২৮ জুলাই দেশে ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়, যা একদিনে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড।

আগের সাত দিনে দেশে যথাক্রমে ১৫৪, ১৯৬, ২৪৭, ২৫৬, ২২৯, ২১৪, ২১১ ও ১৬৬  জন রোগী শনাক্ত হয়।

করোনায় দেশে আবারো মৃত্যু এবং বাসাভাড়া বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব।
চিত্র : করোনাভাইরাস

সর্বশেষ তথ্য অনুসারে দেশে নভেল করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৭১ হাজার ১৩ জনে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৫ হাজার ২৩৪ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১ দশমিক ১৭ শতাংশ। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ছিল ১ দশমিক ১৮ শতাংশ। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার করা হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৬০০ জনের। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ০০ শতাংশ।

রোববার ( ৭ নভেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪ জন মারা গেছেন। গত ১০ আগস্ট ও ৫ আগস্ট দেশে করোনায় মারা যান ২৬৪ জন, যা একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।

আগের সাত দিনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন যথাক্রমে ১, ৩, ৭, ৭, ৩, ৩, ৬ ও ৮ জন।

সর্বশেষ তথ্য অনুসারে দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৮৯৫ জনে। মোট শনাক্তকৃত রোগীর বিপরীতে মৃত্যুর হার এক দশমিক ৭৮ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ১৯০ জন সুস্থ হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত করোনা থেকে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ৮২৫ জন। মোট শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৭০ শতাংশ।

আরো জানুন:

গুরুকুল লাইভ :করোনা ভাইরাসে মারা গেলে আরো ৬ হাজার মানুষ

বাসাভাড়া বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব

বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে পরিবহন মালিকদের দাবির মুখে গণপরিবহনে নতুন করে ভাড়া সমন্বয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। যেখানে বাসভাড়া গড়ে ৪০ শতাংশের বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে। নতুন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দূরপাল্লার বর্তমান বাসভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৪২ পয়সা, তা বাড়িয়ে ২ টাকা করার প্রস্তাব হয়েছে। অর্থাৎ এতে কিলোমিটারপ্রতি যাত্রীকে বাড়তি ৫৮ পয়সা গুনতে হবে। ভাড়া বৃদ্ধির এ হার ৪০.৮৫ শতাংশ।

এছাড়া মহানগরে বাসের বর্তমান ভাড়া কিলোমিটারে ১ টাকা ৭০ পয়সা, প্রস্তাব হয়েছে ২ টাকা ৪০ পয়সা করার। এতে ৭০ পয়সা ভাড়া বাড়বে। বাড়তি ভাড়ার এ শতকরা হার ৪১ দশমিক ১৮ শতাংশ। মহানগরে মিনিবাসের বর্তমান ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৬০ পয়সা। এটি বাড়িয়ে ২ টাকা ৪০ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ভাড়া বাড়ে কিলোমিটারপ্রতি ৮০ পয়সা। ভাড়া বৃদ্ধির এ হার ৫০ শতাংশ।

ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব image collected and edited for reuse
ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব

জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা করে বাড়ানোর প্রতিবাদে সারাদেশে তিনদিন ধরে পরিবহন ধর্মঘট চলছে। পরিবহন মালিকরা শুরু থেকেই হয় ভাড়া সমন্বয় অথবা ডিজেলের দাম কমানোর দাবি জানাচ্ছিলেন।

এরই মধ্যে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর কারণে গণপরিবহনের ভাড়া পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিআরটিএকে চিঠি দেয় বাংলদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বগতির কারণে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ডিজেল-কেরোসিনের দাম পুনর্নির্ধারণ করে সরকার। গত বুধবার (৩ নভেম্বর) রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। নতুন দাম ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছে, যা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়।

ডিজেল-কেরোসিনের দাম বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরদিনই পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপর শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু করে বাস, ট্রাকসহ পণ্যবাহী যানবাহনের মালিকরা। এতে সারাদেশে মানুষকে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ধর্মঘট অনির্দিষ্টকালের হওয়ায় দুর্ভোগ কবে শেষ হবে, এ নিয়েও অনিশ্চয়তায় পড়ে মানুষ।

শুরু থেকেই পরিবহন মালিক ও সংশ্লিষ্টরা বলছিলেন তেলের দাম বাড়ানোর পর, ডিজেলের দাম না কমানো হলে গণপরিবহনসহ অন্যান্য পরিবহনে ভাড়া সমন্বয় করতে হবে।

পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তির শিকার সাধারণ মানুষ বলছেন, বাসের ভাড়া নির্ধারণের দায়িত্ব সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ)। পরিবহন মালিকরা ভাড়া বাড়াতে ধর্মঘট দিয়ে সাধারণ জনগণকে জিম্মি করলেও সরকার তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। ভাড়া বাড়াতে চাপ তৈরির কৌশল হিসেবেই পরিবহন সিন্ডিকেট ধর্মঘটে দিয়েছে।

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ

 

মন্তব্য করা বন্ধ রয়েছে।